- আজ রবিবার
- ১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
- ২৫শে মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
- ২৪শে জিলকদ ১৪৪৬ হিজরি
গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ২৪ মে ২০২৫ | ৫:৩৬ অপরাহ্ণ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও কিছু দেশের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের মাত্রা বাড়ানোর কথা বলেছেন, যার অংশ হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং আমদানি করা আইফোনের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। শুক্রবার (২৩ মে) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দেন। প্রস্তাবিত এই শুল্ক আগামী ১ জুন থেকে কার্যকর হবে বলে ট্রাম্প জানান।
ট্রাম্প তার পোস্টে বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য বিষয়ে সমঝোতা করা দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। তাদের সঙ্গে চলমান আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে ইইউ’র পণ্যের ওপর সরাসরি ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সুপারিশ করেছেন তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত বা উৎপাদিত কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।
ট্রাম্পের দাবি, ইইউ গঠিত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের থেকে বাণিজ্যিক সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু ইইউতে শুল্ক-কর, করপোরেট জরিমানাসহ নানা ধরনের বাণিজ্য ও বাণিজ্যবহির্ভূত বাধা রয়েছে। তাদের বাণিজ্য বাধা, আর্থিক কারসাজি ও মার্কিন কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অযৌক্তিক মামলার কারণে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিবছর ২৫ হাজার কোটি ডলারের বেশি ক্ষতির মুখে ফেলেছে। এ অবস্থাকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর ইউরোপীয় কমিশন যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি নয়, আলোচনায় পারস্পরিক শ্রদ্ধা রাখার কথা বলেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ট্রেড কমিশনার মারোশ সেফচোভিচ শুক্রবার এক্সে (আগের টুইটার) পোস্টে লিখেছেন, “ইইউ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক অতুলনীয়। এটি হুমকির নয়, বরং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া উচিত। আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষায় প্রস্তুত।”
তিনি জানান, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার ও বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকের সঙ্গে তার কথা হয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আমদানি করা সব আইফোনে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, অ্যাপলের ওপর ট্রাম্পের এই চাপ যুক্তরাষ্ট্রে আইফোনের উৎপাদন ফিরিয়ে আনার একটি কৌশল। এর আগে গাড়ি, ওষুধ ও চিপ উৎপাদনকারী কোম্পানির ক্ষেত্রেও একই ধরনের চাপ দেওয়া হয়েছিল।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, অন্যান্য দেশ থেকে উৎপাদন সরানো হলে প্রতিটি আইফোনের দাম শত শত ডলার বাড়তে পারে। হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, এই শুল্ক শুধু অ্যাপলের ক্ষেত্রে নয়, স্যামসাংসহ অন্যান্য স্মার্টফোন নির্মাতার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। আইফোন ও স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে এই নতুন কর জুনের শেষ নাগাদ কার্যকর হবে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।
মার্কিন এই শুল্ক হুমকি এমন এক সময় এলো, যখন উভয় পক্ষের মধ্যে শুল্ক নিয়ে আলোচনা এক ধরনের অচলাবস্থায় রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে একতরফাভাবে মার্কিন ব্যবসার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের বাজার খুলে দিক। অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এমন একটি চুক্তি চায়, যাতে উভয় পক্ষই লাভবান হতে পারে।