- আজ রবিবার
- ৭ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
- ২০শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
- ১৯শে শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি
গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ০২ অক্টোবর ২০২৪ | ১:৩৮ অপরাহ্ণ
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলি সেনারা। গাজার পর লেবাননে একের পক এক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রায় ২০০ মিসাইল নিক্ষেপ করেছে ইরান। রাজধানী তেল আবিবসহ সর্বত্র এই আক্রমণ চালানো হয়েছে। এর জেরে দ্রুত দেশের মানুষকে নিরাপদ বাঙ্কারে পাঠাতে বাধ্য হয় ইসরায়েলের প্রশাসন। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইসরায়েলের আকাশসীমা। এরে জেরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ আরও চড়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি দেশটির সংবাদমাধ্যমকে বলেন, জাতিসংঘের সনদের ৫১ নম্বর ধারায় আত্মরক্ষার অধিকারের কথা বলা হয়েছে। সেই ধারা মেনেই ইসরায়েলে আক্রমণ চালানো হয়েছে। কারণ, ইসরায়েল গাজা ও লেবাননে গণহত্যা চালাচ্ছে।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে আব্বাস আরাঘচি লেখেন, এর আগে ইরানের ভেতরেও হত্যালীলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সে কারণেই আত্মরক্ষার তাগিদে ইরান এই পদক্ষেপ নিয়েছে। বস্তুত, লেবাননে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী ইরানের মদতপুষ্ট, এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ইরানও এ কথা অস্বীকার করে না।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানের এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা করেছেন। প্রথমত, ইরান যাকে ‘গণহত্যা’ বলে ব্যাখ্যা করেছে, ইসরায়েল তা গণহত্যা বলে মানতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, বেছে বেছে গাজা বা লেবাননে বেসামরিক মানুষের ওপর তারা আক্রমণ করেনি। কেবল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে।
মঙ্গলবার ইরানের আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ইরানকে যথাসময়ে এর উত্তর দেওয়া হবে। ইরানের মনে রাখা উচিত, ইসরায়েলকে একবার কেউ আক্রমণ করলে ইসরায়েল তাকে ছেড়ে দেয় না। যথাসময়ে ইরানকে এই আক্রমণের দাম চোকাতে হবে।
এদিকে, ইসরায়েলে ইরান আক্রমণ চালানোর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করছে। কীভাবে এই আক্রমণের জবাব দেওয়া যায়, তা নিয়ে কথা হচ্ছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে ইরান একটি ভয়ঙ্কর ও অস্থির শক্তি। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ সহমত।’ বস্তুত বাইডেন বলেছেন, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরান ফের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে যুক্তরাষ্ট্র তা ধ্বংস করতে সাহায্য করবে।
এদিকে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলের অভিযান অব্যাহত। মঙ্গলবার ইসরায়েলের সেনা ফের বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলের বেসামরিক মানুষকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, ওই অঞ্চলে হিজবুল্লাহর পরিকাঠামো আছে। ফলে সেনা সেখানে অভিযান চালাবে। লাগাতার সেখানে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে অন্তত ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ১৫৬।
এদিকে, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উত্তেজনা প্রশমনের কথা বলেছে। জাতিসংঘের প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক আক্রমণ হয়ে চলেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা করি। এই আক্রমণ প্রতি আক্রমণ এই মুহূর্তে বন্ধ হওয়া উচিত। দ্রুত যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান জসেপ বরেল এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘ইসরায়েলে ইরানের আক্রমণের তীব্র নিন্দা করছি। যেভাবে একের পর এক ঘটনা ঘটছে তাতে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সব পক্ষের কাছে শান্ত হওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।’