• আজ বুধবার
    • ১০ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
    • ২৩শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
    • ২২শে শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি

    ‘এবারের বাজেটে বাংলাদেশ যেন শ্রীলঙ্কার পথে না যায়’ : রুমিন ফারহানা

    ‘এবারের বাজেটে বাংলাদেশ যেন শ্রীলঙ্কার পথে না যায়’ : রুমিন ফারহানা

    গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ২০ জুন ২০২২ | ৩:১৪ অপরাহ্ণ

    বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘’অর্থমন্ত্রী বাজেটের শিরোনাম করেছেন ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন। আর আমি মনে করছি এটি শ্রীলঙ্কা হওয়ার পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে দেওয়ার বাজেট।’’

    প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর রবিবার (১৯ জুন) জাতীয় সংসদের বৈঠকে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

    বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, শ্রীলঙ্কার সেই সময়ের পরিস্থিতি এখন বাংলাদেশে। বেশকিছু অর্থনীতিবিদ তাদের স্বার্থের চিন্তায় কিংবা ভয়ে বলছেন বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কার মতো সমস্যায় পড়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। তবে এই আকালেও হাতেগোনা কিছু অর্থনীতিবিদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের অবশ্যই সেই ঝুঁকি আছে। বাংলাদেশ এখনই যদি খুব সতর্ক না হয় তাহলে দ্রুতই বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতিতে পড়তে পারে।

    তিনি বলেন, এবারের বাজেটে বাংলাদেশ যেন শ্রীলঙ্কার পথে না যায়—সে বিষয়ে দিক-নির্দেশনা, সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপর কথা বলার কথা ছিল। কিন্তু শ্রীলঙ্কা হওয়া ঠেকানোর চেষ্টা দূরেই থাক চরম মূল্যস্ফীতি, আমদানি-রফতানিতে ভারসাম্যহীনতা, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনকভাবে কমতে থাকা, বিনিয়োগ স্থবির, কর্মসংস্থানের চরম সংকট এসব কোনওটির ক্ষেত্রেই কার্যকরী দিক নির্দেশনা নেই।

    রুমিন ফারহানা বলেন, গরিব মানুষের নাভিশ্বাস তৈরি করা বাজেটে অকল্পনীয় পরিমাণ টাকা তুলে দিচ্ছেন সরকারের কিছু অলিগার্ক এর হাতে। এবারের বাজেটে ভর্তুকি খাতে রাখা হয়েছে ৮৩ হাজার কোটি টাকা; যার প্রধান অংশ যাবে বিদ্যুৎ খাতে। গত ১০ বছরে ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও কেন্দ্রগুলো ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ তুলে নিয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকা। তিনি বলেন, ভারতে আদানি গ্রুপের তৈরি গোড্ডা কোল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ২৫ বছরের চুক্তিতে এক লক্ষ কোটি টাকার বেশি শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই দেবে। এমনকি আগস্টে বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পন্ন হবার পর সঞ্চালন লাইনের অভাবে দেশে বিদ্যুৎ না আসলেও ডিসেম্বর পর্যন্ত চার মাসে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে ১ হাজার ২১৯ কোটি টাকা।

    বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দিলেও দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর মতো বিদ্যুৎকেন্দ্র সরকারের আছে। তারপরেও আদানি গ্রুপের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদী বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তিটি কেন করা হয়েছে?

    অর্থ পাচার ফিরিয়ে আনার সুযোগ রাখার সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা লুটপাটের টাকা পাচার করেছেন, তারা সেসব ফিরিয়ে আনার জন্য করেননি। টাকা ফেরত আনার জন্য নয়, পাচারকারীদের নিশ্চিন্ত করতেই এই পদক্ষেপ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঋণ বিপদসীমা পার হয়ে গেছে। এবারের বাজেটে জনগণের করের টাকার এক পঞ্চমাংশই যাবে ঋণের সুদ পরিশোধের পেছনে। বর্তমান বাংলাদেশে একটি শিশু জন্ম নেয় মাথার ওপরে ৯৬ হাজার টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে।

    সরকারের বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পকে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং আরও কিছু প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোতে লুটপাট আর বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে অনেক বেশি। ফলে সেগুলো প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক উপযোগিতা দেওয়া দূরেই থাকুক, পরিণত হবে শ্বেতহস্তীতে।

    রুমিন বলেন, বিদেশের শ্রমবাজারের অবস্থা ক্রমাগত খারাপের দিকে যাচ্ছে। থিঙ্ক-ট্যাংক সিপিডি স্পষ্টভাবে বলেছে বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের স্বর্ণযুগ শেষ। এদিকে বর্তমান ডলারের সংকটের সময় রেমিট্যান্স আসা অনেক কমে গেছে। এর সাথে ব্যাংকিং চ্যানেলেই সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিরাট অঙ্কের টাকা পাচার হচ্ছে, যা রিজার্ভ কমিয়ে দিচ্ছে অতি দ্রুত।

    Comments

    comments

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১
    ১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
    ১৯২০২১২২২৩২৪২৫
    ২৬২৭২৮২৯৩০