- আজ বুধবার
- ১৭ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
- ৩০শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
- ২৯শে শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি
গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ১৭ নভেম্বর ২০২১ | ৬:৩৭ অপরাহ্ণ
কুমিল্লার দেবীদ্বারে শিশু ফাহিমা হতাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে র্যাব। এ ঘটনায় নিহতের বাবাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে, রবিবার (১৪ এপ্রিল) ব্যাগভর্তি অবস্থায় ফাহিমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
শিশু ফাহিমা বাবার পরকীয়ার বলি হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। ফাহিমা আক্তার (৫) দেবীদ্বার পৌর এলাকার চাপানগর গ্রামের ট্রাক্টরচালক মো. আমির হোসেনের মেয়ে। ৭ নভেম্বর বিকেল থেকে সে নিখোঁজ ছিল। খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ১১ নভেম্বর আমির হোসেন দেবীদ্বার থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
রবিবার (১৪ নভেম্বর) ভোরে পথচারীরা ঘটনাস্থলে একটি বাজারের ব্যাগ থেকে শিশুর পা বের হওয়া অবস্থায় দেখে। এ সময় তারা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। পরে পরিবারের সদস্যরা ফাহিমাকে শনাক্ত করেন। ওইদিন আমির হোসেন বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানায় অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় র্যাব কার্যালয়ে ১৩জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ৮জনকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং পাঁচজনকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বুধবার (১৭ নভেম্বর) সকালে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
র্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, ৫ নভেম্বর ফাহিমা তার বাবা আমির হোসেনকে পার্শ্ববর্তী এক নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলে। বিষয়টি মাকে বলে দেবে বলে জানায় ফাহিমা। এ সময় ওই নারীর প্ররোচনায় আমির হোসেনের দুই চাচাতো ভাই রেজাউল ইমন, রবিউল আউয়াল ও তাদের বন্ধু সোহেলসহ রেজাউলের ফার্নিচারের দোকানে বসে একটি পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনানুযায়ী আমির হোসেন তার মেয়েকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। বিনিময়ে রেজাউল, রবিউল, সুমন তার মেয়েকে হত্যার জন্য এক লাখ টাকা দাবি করেন। এতেও রাজি হন আমির হোসেন।
পরবর্তীতে ৭ নভেম্বর রেজাউল, রবিউল, সুমন, লাইলী আক্তার ও আমির হোসেন ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে ফাহিমাকে সোহেলের সিএনজিতে করে নিয়ে যায়। সন্ধ্যায় খাবারের কথা বলে রাস্তার পাশে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায় তাকে। সেখানে ইমন তার গরুর খামার থেকে ২৫ কেজি ওজনের দুটি প্লাস্টিকের গরুর খাবারের ব্যাগ নিয়ে আসেন। রবিউল একটি ছুরি ও আমির হোসেন তার ঘর থেকে আরো একটি ছুরি নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তারা চারজন মিলে ফাহিমাকে হত্যা করেন।
শিশুটির লাশ ইমন তার গরুর খামারের পাশের একটি ড্রামে লুকিয়ে রাখেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহাহৃত সিএনজিতে করেই নিখোঁজের সন্ধানে মাইকিং করা হয়। ৯ নভেম্বর রাতে হত্যাকারীরা উপজেলার কাচিসাইর গ্রামের নির্জন ওই স্থানে লাশভর্তি ব্যাগটি ফেলে আসেন।
বিভিন্ন মোবাইল নম্বর, সিসি ক্যামের ফুটেজ ও লাশের সঙ্গে একটি ডেইরি ফার্মের খাদ্য সরবরাহে ব্যাগের সূত্র ধরে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে র্যাব।