• আজ বৃহস্পতিবার
    • ২৬শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
    • ১০ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
    • ১২ই মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

    গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে কানে সোচ্চার ১০০০ হলিউড ব্যক্তিত্ব

    গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে কানে সোচ্চার ১০০০ হলিউড ব্যক্তিত্ব

    গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ২৪ মে ২০২৫ | ৫:৪৪ অপরাহ্ণ

    কান শহরে লালগালিচায় হাঁটার কথা ছিল এক ফিলিস্তিনি তরুণীর। নাম ফাতিমা হাসৌনা। মাত্র ২৫ বছর বয়সে গাজা শহরের নিজ বাড়িতে ইসরায়েলি বোমায় নিহত হন প্রতিভাবান এই আলোকচিত্রী। তিনি জানতেন না, তার জীবনকাহিনি নিয়ে বানানো ডকুমেন্টারিটি ততক্ষণে পৌঁছে গেছে কান চলচ্চিত্র উৎসবের মনোনয়নের তালিকায়। শিরোনাম ছিল ‘পুট ইউর সোউল অন ইউর হ্যান্ড অ্যান্ড ওয়াক’।

    নির্মাতা ইরানি পরিচালক সেপিদেহ ফারসি। তিনি বলেন, ‘সে ছিল গাজায় আমার চোখ।’ ফাতিমা তাকে বলেছিলেন, ‘যদি মরে যাই, চাই আমার মৃত্যুর আওয়াজ হোক পৃথিবীব্যাপী।’

    ফাতিমার সেই আকাঙ্ক্ষা যেন বাস্তবেই রূপ নিল। শুধু সিনেমার পর্দায় নয়, গোটা কান উৎসবের শহরজুড়েই মানুষের মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে তার নাম।

    তার নামে গড়ে উঠেছে এক আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম, নাম ‘আর্টিস্টস ফর ফাতেম’। সেখানে একত্র হন ৯০০-র বেশি শিল্পী, পরিচালক, অভিনেতা, লেখক, সুরকার থেকে শুরু করে ফ্যাশন দুনিয়ারও বহু তারকা।

    এ তালিকায় আছেন মার্ক রাফালো, সুসান সারানডন, রিচার্ড গিয়ার, রুনি মারা, জিম জারমুশ, ক্যাথরিন দেন্যুভ, গাই পিয়ার্স, রালফ ফাইনস, জাভিয়ের বারদেম, ওয়াকিন ফিনিক্স, ক্যাট ব্ল্যাঞ্চেট, ডুয়া লিপা, জেইন মালিক, বেলা ও গিগি হাদিদ, ব্র্যাডলি কুপার, জন স্টুয়ার্ট, সিনথিয়া নিক্সন, জানেল মোনে, আয়ো এডেবিরি, সেলেনা গোমেজ, এমনকি জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জও।

    তারা সবাই এক খোলা চিঠিতে গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেন। চিঠির ভাষা তীক্ষ্ণ, ‘আমরা শিল্পের মানুষ, তাই নীরব থাকতে পারি না। গাজায় যা চলছে তা মানবতার বিপর্যয়, এক ধরনের জাতিগত নিধন।’

    কান উৎসব সাধারণত রাজনীতি থেকে দূরে থাকে। কিন্তু এবার কিছুটা ব্যতিক্রমী এই আয়োজন। উৎসব কর্তৃপক্ষ নিজেই এক বিবৃতিতে ফাতিমার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে এবং একে ‘অপ্রত্যাশিত, অগ্রহণযোগ্য’ হিসবে অভিহিত করে।

    এই চিঠি এমন সময় প্রকাশিত হয়, যখন গাজায় মৃতের সংখ্যা অতিক্রম করেছে ৫০ হাজার। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গত কয়েক মাসে নারী ও শিশুরাই মারা গেছে সবচেয়ে বেশি।

    এই দুঃসহ বাস্তবতায় ফাতিমার মৃত্যু যেন হয়ে উঠেছে এক প্রতীকের মতো। কান উৎসবের উদ্বোধনী আয়োজনে জুরি প্রেসিডেন্ট জুলিয়েট বিনোশ বলেন, ‘ফাতিমা আজ এখানে থাকার কথা ছিল। সিনেমা টিকে থাকে, সে আমাদের স্বপ্ন আর সাহসের দলিল।’

    যে মেয়ে একদিন ভিডিও কলে বলেছিলেন, ‘এই বেঁচে থাকাটাও এক ধরনের যুদ্ধ’, তার গল্প এখন যুদ্ধবিরোধী শিল্পীদের একক আওয়াজ। কান শহরে এবার শুধু সিনেমা ও গ্ল্যামারের আলো নয়, ছড়িয়ে আছে প্রতিবাদের আলোকচ্ছটাও।

    Comments

    comments

    আর্কাইভ

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১
    ১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
    ১৯২০২১২২২৩২৪২৫
    ২৬২৭২৮২৯৩০৩১