- আজ বৃহস্পতিবার
- ১১ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
- ২৪শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
- ২৩শে শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি
গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ৮:২৯ অপরাহ্ণ
ফিলিস্তিনের গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ভোরে এ হামলা চালানো হয়। জানা যায়, হামলার পরপরই বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। তবে এ ঘটনায় কেউ নিহত-আহত হয়েছেন কি না তা এখনো জানা যায়নি।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনির সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের রকেট তৈরির ভূগর্ভস্থ কারখানায় আক্রমণ চালিয়েছে তারা। রোববার গাজা সীমান্ত থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ার প্রতিক্রিয়ায় এ হামলা চালানো হয়েছে। যদিও ওই রকেটটি গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করে ইসরায়েলি বাহিনী।
কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বলছে, ফিলিস্তিনের কোনো সশস্ত্র বাহিনীই ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানো দায় স্বীকার করেনি। এদিকে, অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরের একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছেন ইসরায়েলি বাহিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা সেখানে গুলির শব্দ শুনেছেন। সম্ভবত হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। অনেকের দাবি, গোলাগুলির ঘটনায় এক ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এর আগে ফিলিস্তিনের আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘ডেন অব লায়ন্স’দাবি করে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়েছে তারা। ডেন অব লায়ন্স মূলত ফিলিস্তিনের নাবলুস ও জেনিন শহর ভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী।
এদিকে, জেনিনে অভিযানের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। গত বছরের বিভিন্ন সময়েও জেনিনে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। ওই অভিযানে অনেক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান।
চলতি বছরের দুই মাস যেতে না যেতেই ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ও অভিযানে অন্তত ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, একই সময়ের মধ্যে ফিলিস্তিনির পালটা আক্রমণে ১০ ইসরায়েলি নিহত হন।
রোববার সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশের নেতা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সতর্ক করেছিলেন, তাছাড়া দুই পক্ষের মধ্যে সহিংসতার প্রবণতা অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড ও দখলদারত্ব বৃদ্ধির ফলে পরিস্থিতি আরও অশান্ত হতে পারে।
এর আগে আরব লিগের এক বৈঠকে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছিলেন, ফিলিস্তিনিরা অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি বাহিনীর ‘মারাত্মক হামলা’র সম্মুখীন হচ্ছেন। ইহুদি রাষ্ট্রটির এমন সহিংসতা বন্ধ করতে বিশ্ব নেতাদের শিগগির কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বলেন।
আব্বাস বলেন, ইসরায়েলের ষড়যন্ত্র ও ‘ঘৃণিত’ সামরিক অনুশীলন সব সীমা অতিক্রম করেছে। এমন অবস্থায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষা করা ও ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া।
এদিকে, উত্তেজনা বাড়তে পারে জেনেও শনিবার পশ্চিম তীরের নয়টি ইহুদি বসতিকে বৈধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয় নেতানিয়াহু প্রশাসন।
গত মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন উত্তেজনাপূর্ণ ওই অঞ্চল সফরে যান। সেসময় তিনি বসতি সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছিলেন।
২০০৭ সালে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর বেশ কয়েকবার ইসরায়েল হামলা চালায় হামাস। মূলত গাজার ছোট ছোট সশস্ত্র উপদলগুলো যখন ইসরায়েলে হামলা চালায়, তখন হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেয় ইসরায়েল।
১৯৬৭ সালে মাত্র ছয় দিন যুদ্ধ হওয়ার পর পশ্চিম তীরের দখল নেয় ইসরাইল। বর্তমানে সেখানে প্রায় চার লাখ ৭৫ হাজার ইহুদি বসতি স্থাপন করেছেন। আন্তর্জাতিক আইনে স্থাপনাগুলো অবৈধ বলে বিবেচিত।