- আজ সোমবার
- ৮ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
- ২১শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
- ২১শে শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি
গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ২৩ নভেম্বর ২০২১ | ৩:২১ অপরাহ্ণ
শিশু বিবেচনায় কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে দায়িত্বশীল কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তাকে একদিন জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়ে অভিযুক্তকে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে
রাজধানীর বেইলি রোডে বেপরোয়া প্রাইভেটকারের চাপায় রিকশা আরোহীদের মারাত্মকভাবে আহত করার ঘটনায় গ্রেপ্তার কিশোরের জামিন আবেদন নাকচ করে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। শুনানির সময়ে বিচারক গ্রেপ্তার কিশোরের বাবার উদ্দেশে বলেন, সাজা তারই হওয়া উচিত।
গতকাল সোমবার (২২ নভেম্বর) ঢাকার ৬ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের বিচারক আল-মামুন এ আদেশ দেন।
১৫ বছর বয়সী ওই কিশোর কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তারজেল হোসেনের ছেলে। ঢাকার আদালতে ওই কিশোরকে হাজির করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ।
শিক্ষানবিশ আইনজীবী হাসিবুজ্জামান জানান, তার বাবা তারজেল হোসেন জামিন আবেদন করেন।
জামিন আবেদন ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে ওই কিশোরকে গাজীপুরের টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। শিশু বিবেচনায় রিমান্ড আবেদন নাকচ করার কথা জানালেও কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে দায়িত্বশীল কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তাকে একদিন জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন বিচারক।
শুনানির সময়ে বিচারক আল-মামুন ওই কিশোরকে দেখিয়ে বলেন, “ওর তো গাড়ি চালানোর বয়স হয়নি। লাইসেন্স নাই। তার হাতে গাড়ি দিল কেন? ওর বাবা এত দায়িত্বহীন কেন?”
শুনানিতে কিশোরের কাছে জানা যায়, গাড়িটি তার বাবার নামে নিবন্ধিত। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেসমিন আক্তার বিচারককে বলেন, “সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি, ৬ মাস আগে কেনা হয়েছে। তার বাবা সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী।”
তারজেল হোসেনের কাছে ছেলের গাড়ি চালানোর লাইসেন্সের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি তার ছেলের গাড়ি চালানোর লাইসেন্স না থাকার কথা জানান। তিনি এও জানান, গাড়ি নিয়ে ছেলের বের হওয়ার বিষয়ে তিনি জানতেন না।
তখন বিচারক আল-মামুন তারজেল হোসেনকে বলেন, “সাজা তো আসলে আপনার হওয়া উচিত।”
ওই কিশোরকে বিচারক বলেন, “এখনো অনেক সময় পড়ে আছে। বড় হও, অনেক গাড়ি চালাতে পারবে। তুমি তো একজনের ছেলে। যে শিশুটাকে আহত করেছ সেও তো কারও না কারও ছেলে। কত সময়, কত দিন পড়ে আছে, জীবনটা কী এতো ছোট!”
গত শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মগবাজার এলাকার বাসিন্দা শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা ফখরুল হাসান তার পাঁচ মাসের শিশুপুত্রকে নিয়ে বের হন। তিনি একটি রিকশা নিয়ে মগবাজার থেকে বেইলি রোড হয়ে রমনা পার্কের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বেইলি রোডে একটি বেপরোয়া গতির প্রাইভেটকার তাদের বহনকারী রিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে রিকশাচালক আনোয়ার ইসলামসহ গুরুতর আহত হন ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার পাঁচ মাসের শিশু পুত্র ইব্রাহিম মোহাম্মদ বিন হাসান।
ঘটনার পরদিন (শনিবার) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তাসকিন মাকে নিয়ে বাসে করে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলায় তার দাদার বাড়ি চলে যায়। সেখান থেকে আবার চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গায় তার খালার বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপনে থাকে।
গত রবিবার ভোরে মেহেরপুর জেলা পুলিশের সহযোগিতায় চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থানাধীন হাট বোয়ালিয়া নতুন বাজার এলাকা থেকে তাসকিনকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে লোকজনকে জখম করা হয়েছে উল্লেখ করে রমনা থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা করা হয়।