• আজ সোমবার
    • ৮ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
    • ২১শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
    • ২১শে শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি

    ব্লগার অনন্ত হত্যায় ৪ জনের ফাঁসি

    ব্লগার অনন্ত হত্যায় ৪ জনের ফাঁসি

    গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ৩০ মার্চ ২০২২ | ২:১১ অপরাহ্ণ

    সিলেটে বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার রায়ে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। খালাস দেয়া হয়েছে একজনকে। রায়ে দণ্ডিতদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।

    সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব বুধবার দুপুরে এই রায় দেন। হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৭ বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হলো।

    মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন, খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ ওরফে হারুন অর রশিদ ও কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ।

    খালাস দেয়া হয়েছে নগরের রিকাবীবাজার এলাকার সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান। ফরাবী ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার দণ্ডিত আসামি।

    ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ আইনজীবী (পিপি) মুমিনুর রহমান টিটু সাংবাদিকদের বলেন, রায় ঘোষণার সময় আবুল খায়ের রশীদ আহমদ এবং ফারাবী উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।

    গত ১৪ মার্চ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন বিচারক।

    পেশায় ব্র্যাক কর্মকর্তা অনন্ত বিজয় বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখি করতেন। যুক্তি নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন আর যুক্ত ছিলেন মুক্তমনা ব্লগের সাথে। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

    পুলিশের অভিযোগপত্র মতে, লেখালেখির কারণে উগ্রবাদী গোষ্ঠিই তাকে হত্যা করেছে।

    যেভাবে হত্যা
    ২০১৫ সালের ১২ মে, প্রতিদিনের মতো ওইদিনও অফিসে যাওয়ার জন্য সকালে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা অনন্ত বিজয় দাশ। সিলেট নগরের সুবিদবাজারের দস্তিদার পাড়ায় তার বাসা। বাসা থেকে বের হয়ে মূল সড়কে আসার পরপরই আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাড়া করে তাকে। প্রাণভয়ে দৌড় দেন অনন্ত। বাড়ির পাশে দিঘীর সামনে যাওয়ার পরই দুর্বৃত্তরা নাগাল পেয়ে যায় তার। সেখানেই কুপানো হয় তাকে। পরে অনন্তর ক্ষতবিক্ষত দেহ নিয়ে যান সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী অনন্ত হত্যার প্রতিবাদে পরদিন সিলেটের হরতাল ডাকে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবিতে গঠিত এই মোর্চা।

    হত্যাকাণ্ডের পরদিনই অনন্তের বড় ভাই বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।

    প্রথমে মামলাটি পুলিশ তদন্ত করলেও পরে তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তরিত হয়। সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৯ মে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন। এতে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক ১০ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

    অভিযুক্তরা হলেন, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন, খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ, কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন, কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ এবং সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকার সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান।

    তাদের মধ্যে ফারাবী ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে মান্নান রাহী আদালতে অনন্ত হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

    ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর মান্নান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আসামিদের মধ্যে আবুল হোসেন, ফয়সাল আহমদ ও মামুনুর রশীদ পলাতক রয়েছেন।

    এই মামলায় সাক্ষী ছিলেন ২৯ জন। তবে সাক্ষীদের আদালতে হাজির করতে না পারায় বারবার পিছিয়ে যায় মামলার শুনানি। অন্তত ১৫ দফা পেছায় মামলার শুনানি। এছাড়া করোনার কারণেও দীর্ঘদিন বন্ধ ছিলো মামলার কার্যক্রম। অবশেষে মামলাটি দ্রুত শেষ করতে মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয় এর কার্যক্রম। এতে গতি আসে মামলার কার্যক্রমে।

    Comments

    comments

    আর্কাইভ

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১
    ১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
    ১৯২০২১২২২৩২৪২৫
    ২৬২৭২৮২৯৩০