• আজ রবিবার
    • ৭ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
    • ২০শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
    • ১৯শে শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি

    লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দান

    গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ২০ জুলাই ২০২১ | ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ

    পাপমুক্তি ও আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনা নিয়ে পবিত্র হজ পালন করেছেন ৬০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে সোমবার আরাফাতের ময়দানে সমবেত হন তাঁরা। তাঁদের কণ্ঠে ছিল আবেগ মেশানো একটাই রব, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।’ অর্থাৎ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।’

    সৌদি আরবের হজবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি, রয়টার্সসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত বছরের মতো এ বছর সৌদি আরবের বাইরের কোনো দেশ থেকে হজে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না মুসল্লিরা। যাঁরা করোনা টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন, বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছর এবং কোনো সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত নন, শুধু তাঁরাই হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন। হজ পালনকালে মুসল্লিদের স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

    হজের তিনটি ফরজের মধ্যে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত না হলে হজ হবে না। এ ময়দানে মসজিদে নামিরাহ থেকে এবার হজের খুতবা দেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. বান্দার বিন আবদুল আজিজ বালিলা। খুতবার শুরুতে মহান আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা এবং মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর ওপর দরুদ শরিফ পাঠ করেন তিনি। উপস্থিত হাজিদের সুস্থতা কামনা ও তাঁদের জন্য দোয়া করেন।

    আরাফাতের দিনটি আল্লাহর দরবারে তাঁর বান্দাদের দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ একটি দিন। হজের খুতবায় মহানবী (সা.) যেভাবে হজ পালন করেছিলেন অর্থাৎ আরাফাতে, মুজদালিফায়, মিনায় হজের দিনগুলোতে যা যা করেছিলেন, সেগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন।

    এ বছর হজের খুতবার বাংলা অনুবাদক হিসেবে মনোনীত হন বাংলাদেশের মাওলানা আ ফ ম ওয়াহীদুর রহমান। তাঁর বাড়ি কক্সবাজারে। তিনি মক্কা ইসলামি সেন্টারে দাঈ (ইসলামের দাওয়াতের কাজে নিযুক্ত) হিসেবে কাজ করছেন। গত বছর থেকে আরাফার দিনের খুতবা সরাসরি বাংলাসহ ১০টি ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে।

    আরাফাতের ময়দান মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এ ময়দানে মসজিদে নামিরাহতে জামাতে অংশগ্রহণকারী হাজিরা জোহরের ওয়াক্তে একই আজান ও দুই ইকামতের সঙ্গে একই সময় পরপর জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করেন। নামাজের আগে ইমাম সাহেব খুতবা দেন। যাঁরা মসজিদে জামাতে শামিল হতে পারেননি, তাঁরা নিজ নিজ তাঁবুতেই জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন।

    আরাফাতের ময়দান থেকে সূর্যাস্তের পর মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা দেন হাজিরা। মুজদালিফা যাওয়ার পথে মাগরিবের নামাজের সময় হলেও নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। তাই মুজদালিফায় পৌঁছার পর মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করেন তাঁরা।

    মুজদালিফার খোলা প্রান্তরে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটান হাজিরা। এই মুজদালিফায় হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.) রাত কাটান। শয়তানের উদ্দেশে পরপর তিন দিন ছোড়ার জন্য ৭০টি পাথর এখান থেকেই সংগ্রহ করতে হয়।

     

    মুজদালিফায় অবস্থান করা ওয়াজিব। ফজরের নামাজ পড়ে দোয়া–দরুদ পড়ে সূর্যোদয়ের কিছু আগে মিনার উদ্দেশে রওনা দেওয়া, বড় জামারাহ্য় গিয়ে শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপ করা পরবর্তী কাজ। জামারাহ্ হলো মিনা ময়দানে অবস্থিত তিনটি স্তম্ভ। এগুলোর নাম ছোট জামারাহ্, মধ্যম জামারাহ্ ও বড় জামারাহ্। পাথর নিক্ষেপ–পরবর্তী কাজ হলো দমে শোকর বা কোরবানি করা। জামারাহ্ থেকে বেরিয়ে মাথা মুণ্ডন করতে হয়। পরে গোসল ও সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় বদল করবেন হাজিরা। এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মসজিদুল হারামে গিয়ে কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। ১০ থেকে ১২ জিলহজ তাওয়াফে জিয়ারত করা হজের অন্যতম ফরজ কাজ। তাঁরা সাফা-মারওয়া সাঈ (সাতবার দৌড়াবেন) করবেন।

    তাওয়াফ, সাঈ শেষে সেখান থেকে তাঁরা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানের উদ্দেশে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। এভাবেই শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।

    Comments

    comments

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১
    ১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
    ১৯২০২১২২২৩২৪২৫
    ২৬২৭২৮২৯৩০