- আজ সোমবার
- ২রা আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
- ১৬ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
- ১৭ই জিলহজ ১৪৪৬ হিজরি
গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭:০৪ অপরাহ্ণ
পাহাড়ে বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা অবরোধের কারণে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) থেকে সাজেকে আটকা পড়েছেন প্রায় দেড় হাজার পর্যটক। এদিকে অবরোধের কারণে সাজেকে নেওয়া যাচ্ছে না জ্বালানি তেল, যার কারণে দেখা দিয়েছে খাবারসহ আরো নানা সংকট।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাপ্তাহিক ছুটিতে শুক্রবার সকালে সাজেক যান বেশকিছু পর্যটক, যারা শনিবার ফিরে আসার কথা থাকলেও বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা শনিবার সকাল ৬টা থেকে টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধের কারণে ফিরতে পারছেন না। এসব পর্যটকের মধ্যে নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধ রয়েছেন। যাদের কেউ কেউ জটিল রোগে আক্রান্ত। আবার অনেক চাকরিজীবী রয়েছেন, যারা সাপ্তাহিক ছুটিতে বেড়াতে এলেও সাপ্তাহিক ছুটির পরও ফিরতে পারছেন না।
সাজেক কটেজ মালিকদের সূত্রে জানা যায়, সাজেকে প্রায় দেড় হাজার পর্যটক ও ১৭৮টি পর্যটকবাহী গাড়ি শনিবার থেকে আটকা পড়ে আছে। সাজেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ। জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও অবরোধের কারণে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে অনেক কটেজে জেনারেটর সুবিধাও বন্ধ হয়ে পড়ছে। আবার জ্বালানি তেল না থাকায় পানি উত্তোলনও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ ছাড়া সাজেকে তিন শতাধিক কটেজ ও রেস্টুরেন্টের মালিক-কর্মচারী মিলে রয়েছে আরও প্রায় দেড় হাজার মানুষ। জ্বালানি তেল, জ্বালানি গ্যাস সংকটে বেশকিছু রেস্টুরেন্ট ইতোমধ্যে বন্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে সাজেকে অবস্থান করা পর্যটকসহ প্রায় তিন হাজার মানুষের খাবার সংকট দেখা দিয়েছে।
সাজেক অবকাশ কটেজের স্বত্বাধিকারী বিজয় ঘোষ গণমাধ্যমকে বলেন, অবরোধের কারণে শনিবার থেকে আমাদের কটেজেই ৬৫ জনসহ প্রায় দেড় হাজার পর্যটক সাজেকে আটকা পড়ে আছেন। বিদ্যুৎ নেই বৃহস্পতিবার থেকে। জেনারেটর দিয়ে পর্যটকদের সেবা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বর্তমানে জ্বালানি তেলের সংকটের কারণে সেই সেবাও বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এতে গরমে শিশুরা কষ্ট পাচ্ছে। অনেক অসুস্থ রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। কেননা সাজেকে তেমন অগ্রিম খাবার মজুদ রাখা হয় না। ৪০ কিলোমিটার দূরের বাঘাইহাট থেকে খাবার নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু অবরোধের কারণে তা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। খাবার না থাকায় সাজেকের মনটানা রেস্টুরেন্ট গতকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। আমাদের কটেজের লোকজনের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছি। একটি রেস্টুরেন্টের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা দুপুরে শুধু ডাল-ভাত খাওয়াতে পারবে।
জ্বালানি তেল পাঠানো গেলে সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে বলে আশা করেন সাজেক অবকাশ কটেজের স্বত্বাধিকারী বিজয় ঘোষ।
সাজেক নিরিবিলি কটেজের মালিক মো. ফয়সাল আহমেদ বলেন, সাজেকে প্রচুর পর্যটক আটকা আছে। অবরোধের কারণে তেল নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় পানিসহ বেশকিছু সংকট দেখা দিয়েছে। যদি পর্যটকদের আজকের মধ্যে ফেরানো না যায়, অবস্থা খুব খারাপ হবে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে বলেন, সাজেকে আটকে পড়া পর্যটকদের বিভিন্ন সংকটের বিষয়টি আমরা জেনেছি। বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলছি। আজ বিকেলের মধ্যে পর্যটকদের সাজেক থেকে ফেরানোর ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।