- আজ মঙ্গলবার
- ৯ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
- ২২শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
- ২২শে শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি
গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ১২ জানুয়ারি ২০২২ | ৭:১১ অপরাহ্ণ
রাঙামাটির খরস্রোতা চেঙ্গী নদীর ওপর দেশীয় প্রযুক্তি এবং উপকরণ ব্যবহার করে নির্মাণ হওয়া সেতুটি পরিবহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১২ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘতম সেতুটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সময় তিনি কক্সবাজারের বালুখালী থেকে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্ত সংযোগ সড়ক উদ্বোধন করেন।
এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের অধীনস্থ ২০ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন (ইসিবি) রাঙামাটির নানিয়ারচরে ‘চেঙ্গী সেতু’ নির্মাণ করে। চেঙ্গী নদীর ওপর নির্মিত এই সেতুটির দৈর্ঘ্য ৫০০ মিটার ও প্রস্থ ১০ দশমিক ২ মিটার। অ্যাপ্রোচ সড়কসহ সেতুটি নির্মাণে খরচ হয়েছে ২২৭ কোটি টাকা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নানিয়ারচরে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে দীর্ঘতম এই সেতু নির্মাণের ফলে শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন আরও একধাপ এগোলো। এতে স্থানীয়দের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে ভূমিকা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে শান্তিচুক্তি করেছিলাম। এখনও শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে।
চেঙ্গী নদী সেতুর প্রকল্প পরিচালক কর্নেল মুহম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়েছে। এই সেতুর মাধ্যমে স্থানীয়দের যোগাযোগের নতুন যুগের সূচনা হলো। এই সেতু দিয়ে এখন নানিয়ারচর থেকে সরাসরি রাঙামাটি-চট্টগ্রাম যাওয়া সহজ হয়েছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পর্যটন উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এই সেতু।
রাঙামাটির সংসদ সাংদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, এই সেতুর ফলে তিনটি উপজেলার সঙ্গে জেলার সদরের যোগাযোগের পথ সুগম হবে। এর জন্য নানিয়ারচর থেকে লংগদু ও মারিশ্যা পর্যন্ত বাকি সড়কের কাজ দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন। সেতুটির উদ্বোধনে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। সহজেই উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করা যাবে। প্রান্তিক কৃষকরা পাবেন ন্যায্যমূল্য।
ভিডিও কনফারেন্সে নানিয়ারচর প্রান্ত থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলম, কক্সবাজার-২ আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার-৩ আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদীন ও সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, রাঙামাটি-নানিয়ারচর-লংগদু-বাঘাইছড়ি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ১৯৯৩ সালে নানিয়ারচর অংশে চেঙ্গি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। অবশেষে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নানিয়ারচরের চেঙ্গি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেতুমন্ত্রীর ঘোষণার দুই বছর পর ২০১৭ সালের জুলাই মাসে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শুরু হয় সেতুর নির্মাণকাজ।