- আজ সোমবার
- ৮ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
- ২১শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
- ২০শে শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি
গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ২৮ এপ্রিল ২০২২ | ৪:৫৩ অপরাহ্ণ
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে হতদরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফ’র চাল বিতরণের ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে জেলা সদরের বেশকয়েকটি ইউনিয়নে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে। অস্বচ্ছলদের চাল না দিয়ে স্বচ্ছল ও দলীয় ব্যাক্তিদের চাল দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। গতকাল বুধবার সদরের বেশকয়েকটি ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফ’র চাল বিরতণ করা হয়।
সদরের আকচা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দুই বাসিন্দা বৃদ্ধা মহেসিনা বেগম, ফাতেমা বেগম সারাদিন রোজা রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও চাল পাননি। পরে মেঝেতে পরে থাকা চাল কুড়িয়ে ব্যাগে ভরে বাড়ি ফিরেন। ৮নং ওয়ার্ডের একবৃদ্ধা একমুঠো চালের আশায় সারাদিন পরিষদের মাঠে বসে থাকেন। কিন্তু তিনিও চাল না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরেন। অভিযোগ রয়েছে, আকচা ইউনিয়নে অস্বচ্ছলদের ভিজিএফ’র কার্ড না দিয়ে স্বচ্ছল ও দলীয় লোকদের ভিজিএফ’র চাল দেওয়া হয়েছে।
ইউনিয়নবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সারাদিন রোদে পুড়ে অসহায় বৃদ্ধারা যদি চাল না পায় তাহলে ভিজিএফ’র চাল কারা পেলো? আকচার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নিজের মন যা চায় তাই করছে। তিনি কাউকে পরোয়া করেন না। যারা সত্যিকারেই অসহায় তাদের দু’একজন ছাড়া বাকিরা কেউ চাল পাননি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ বলেন, স্বচ্ছল নয় অস্বচ্ছলদের চাল দেওয়া হয়েছে।
একই চিত্র সুখানপুখুরি ইউনিয়নে। সেখানে চাল বিতরণের সময় প্রত্যেক কার্ডধারিদের আধা কেজি থেকে এক কেজি পর্যন্ত ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন অধিকাংশ সুবিধাভোগী। তবে বিষয়টি বরাবরের মতো অস্বীকার করেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান।
অন্যদিকে বেগুনবাড়ি ইউনিয়নে চাল বিতরণের সময় সুবিধাভোগীদের হাতে চাল তুলে দেয়ার পর দরিদ্র কার্ডধারী মানুষগুলোর কাছে বস্তার দাম আদায় করা হয় ২৫ টাকা করে। এতে ক্ষুদ্ধ ওই ইউনিয়নের সুবিধাভোগীরা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বনি আমিন সংবাদকর্মীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, বস্তার টাকা না নিলে চাল আনা নেয়ার খরচ কে দিবে? তাই খালি বস্তা প্রতি ২৫ টাকা করে নেয়া হয়েছে।
অপরদিকে ঢোলারহাট ইউনিয়নে ভিজিএফ কার্ডের বরাদ্দ না পেয়ে নিজ অর্থায়নে হত-দরিদ্রদের মাঝে চাল বিতরণ করেন ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হোসেন আলী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভিজিএফ চাল বিতরণের মিটিংয়ে আমি বৃষ্টির কারণে উপস্থিত থাকতে পারিনি। আমার ওয়ার্ডে ৬১৯ জনের মধ্যে ২২টি ভিজিএফের কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আমি বলেছিলাম, ২২টি কার্ড কাকে দিবো? কিছু কার্ড বাড়ায় দেন। একথা বলার পর ইউপি চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র রায় আমাকে বলেন, তোমাকে চাল বিতরণ করার দরকার নাই। আমার লোক গিয়ে বিতরণ করবে।
অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র রায় জানান, হোসেন মেম্বার বিএনপিপন্থী লোক। সবসময় মিথ্যা কথা বলে। হোসেনের বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নেবো। ওই ওয়ার্ডের মাসুদ, রশিদুল ও হাসিবুল এর মাধ্যমে ভিজিএফ এর চাল বিতরণ করেছি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান জানান, চাল বিতরণে অনিয়ম হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।