• আজ সোমবার
    • ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
    • ১৯শে মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
    • ১৯শে জিলকদ ১৪৪৬ হিজরি

    জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মবেশে পাকিস্তানের এজেন্ট ছিলেন: হানিফ

    জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মবেশে পাকিস্তানের এজেন্ট ছিলেন: হানিফ

    গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ২২ আগস্ট ২০২৩ | ৬:১৮ অপরাহ্ণ

    আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মবেশে পাকিস্তানের এজেন্ট ছিলেন উল্লেখ করে হানিফ বলেন, জিয়া যে পাকিস্তানের এজেন্ট এটা একাত্তরে ধরা পড়েছিল। আর ধরা পড়ার কারণে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গনি ওসমানী তাকে বহিষ্কারও করেছিলেন। কিন্তু যুদ্ধরত বাঙালিরা যাতে মনোবল না হারায় সেজন্য সরকারের অনুরোধে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

    ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকেও আসামি করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।

    তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে কিন্তু কুচক্রী তারেক রহমানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। এই মামলা এখন উচ্চ আদালতে আছে, আমাদের দাবি এই মামলা রিভিউ করে তারেক রহমানের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হোক। মামলায় খালেদা জিয়ার নামও থাকা উচিত ছিল। কারণ সেসময় তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এই হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ দায় তার। তাই বেগম খালেদা জিয়াকেও আসামি করে বিচার হওয়া উচিত।

    মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে কমলাপুর ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক লীগ আয়োজিত আলোচনা, দোয়া মাহফিল ও গণভোজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।

    মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, পাপ কাজ করে রেহাই পাওয়া যায় না। পাপের খতিয়ান বের হয়ে আসছে। গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিট হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। মুফতি হান্নানসহ আসামিরা জবানন্দিতে বলেছে, হাওয়া ভবনে বসে ২১ আগস্ট বোমা হামলার পরিকল্পনার করা হয়েছিল। আর তাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রটেকশনের ব্যবস্থা করেছিলেন।

    তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য ক্যু হয়েছে কিন্তু কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে পরিবারসহ বিশেষ করে পরিবারের নারী ও শিশু হত্যার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু বাংলাদেশে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। এর একটাই কারণ একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়া। আমাদের দুর্ভাগ্য এই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তারা সবাই ছিল বাঙালি। মীরজাফরের বংশধর, পাকিস্তানের এজেন্ট। স্বাধীনতার পক্ষের কোনো মানুষ তাকে হত্যা করতে পারে না।

    হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। কিন্ত আত্মস্বীকৃত খুনি ফারুক, রশীদ, ডালিম, হুদা এরা ছিল ভাড়াটিয়া। এই হত্যাকাণ্ডে আন্তর্জাতিক চক্রান্তের হাতিয়ার হিসেবে বাংলাদেশে কো-অর্ডিনেটর ছিল খুনি জিয়া। বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া যে জড়িত ছিল তার একাধিক প্রমাণ রেখে গেছেন।

    হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় ডেপুটি চিফ অব স্টাফ ছিলেন জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আত্মস্বীকৃত খুনিদের গ্রেফতার করে তাদের বিচারের আওতায় না এনে বরং তাদেরকে পুরস্কৃত করেছিলেন। খুনি ফারুক, রশীদ দেশে-বিেদেশে সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাৎকার দিয়ে বারবার বলেছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে তারা একাধিকবার জিয়ার সাথে বৈঠক, পরিকল্পনা করেছে। জিয়া তাদের উৎসাহ, নির্দেশনা দিয়েছেন। জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত ছিলেন এটাই তার বড় প্রমাণ। আর না হলে খুনিদের বিচার না করে কেন দূতাবাসে নিয়োগ দিবে, প্রমোশন পুর্নবাসন করবে।

    জিয়া বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্য বানানোর চেষ্টা করেছিলেন এমন অভিযোগ করে হানিফ বলেন, জিয়া ক্ষমতা দখল করে সরকার গঠন করলেন কাদের নিয়ে? পাকিস্তানের আদর্শের জন্য যারা লড়াই করেছে তাদের দিয়ে মন্ত্রিসভা করলেন। রাজাকার শাহ আজিজুর রহমানকে করলেন প্রধানমন্ত্রী, কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল আলিমকে বানালেন মন্ত্রী। যারা একাত্তরে গণহত্যা জড়িত ছিল এরকম সাড়ে ১১ হাজার রাজাকার আলবদরদের দালাল আইন বাতিল করে মুক্ত করে দিলেন।

    কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আজমকে নাগরিকত্ব দিলেন। আর যাদের কারণে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষকে প্রাণ হাারাতে হয়েছিল, মা-বোনদের পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছিল, আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল সেই জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিলেন। এতে প্রমাণ হয় জিয়া বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্য বানানোর চেষ্টা করেছেন, বলেন হানিফ।

    তিনি বলেন, জয় বাংলা স্লোগান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের শিহরণ, প্রেরণা জাগাত সেই স্লোগান নিষিদ্ধ করলেন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নামই নিষিদ্ধ করলেন। যে ব্যক্তি সারাজীবন বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই সংগ্রাম করলেন তার নাম মুছে দেয়া হলো৷ ৩০ লাখ শহীদের আত্মাকে পদদলিত করে পাকিস্তানি ভাবাদর্শের দেশ প্রতিষ্ঠা করলেন।

    দেশের মানুষ পিছন ফিরে যেতে চায় না মন্তব্য করে হানিফ বলেন, বিএনপি নেতারা বলছেন টেক ব্যাক বাংলাদেশ। তারা বাংলাদেশকে আবার পিছনে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান। কোন বাংলাদেশে আপনারা নিয়ে যেতে চান? ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের বাংলাদেশ নাকি পঁচাত্তর পরবর্তী জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশে উন্নয়ন-অগ্রগতি নাই। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান বানিয়েছিল। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের চারণভূমি বানিয়েছিল। এই রকম জঙ্গিরাষ্ট্র বাংলাদেশের মানুষ দেখতে চায় না।

    আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জাতীয় শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক কেএম আজম খসরু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম মাসুদ সেরনিয়াবাত প্রমুখ।

    আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান।

    Comments

    comments

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১১২১৩১৪১৫১৬
    ১৭১৮১৯২০২১২২২৩
    ২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
    ৩১