- আজ শুক্রবার
- ৫ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
- ১৮ই এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
- ১৭ই শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি
গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে সদর উপজেলার হাটলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার লঞ্চঘাটে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের জের ধরে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাসকে জেলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে নেতাকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় এমপির সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। রক্তক্ষয়ী এই সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত চারজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার হাটলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার লঞ্চঘাটে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতের অধিকাংশের বাড়ি গজারিয়া উপজেলায় বলে জানা গেছে।
এদিকে সমর্থকদের এমন কর্মকাণ্ডের জন্য আয়োজিত জনসভা থেকে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাসকে জেলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা শুক্রবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ৭৫টি ট্রলারে করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দুপুরে গজারিয়া উপজেলা থেকে সদর উপজেলার উদ্দেশে রওনা হন।
বিকেল ৫টার দিকে ট্রলারগুলো মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার হাটলক্ষ্মীগঞ্জ লঞ্চঘাট এলাকায় পৌঁছলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মকবুল হোসেনের ভাই মনির হোসেনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদের অধিকাংশই গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহর সমর্থক বলে জানা গেছে।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, হামলার ঘটনার পর অনেকে গজারিয়ায় ফিরে এসেছেন। আহতদের মধ্যে ৩৩ জন এখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি দেয়া হয়েছে। চারজনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও কয়েকটি বেসরকারি ক্লিনিকে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী চিকিৎসা নিয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ বলেন, ‘অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হলেও তার অনুসারীরা অধিকাংশই বিএনপি সমর্থক।
‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলাম। সেখানে তার সমর্থকদের দিয়ে রাস্তায় মহড়া দেয়ার কী দরকার ছিল? তারা পরিকল্পিতভাবে হামলার ঘটনা ঘটিয়ে আওয়ামী লীগের ইমেজ নষ্ট করতে চেয়েছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বিচার চাই।’
মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মকবুল হোসেন বলেন, ‘ট্রলারে করে গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিন্নাহর লোকজন শহরের হাটলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার লঞ্চঘাটের অদূরে বেড়িবাঁধে আসে। সেখানে আমার ছোট ভাইয়ের পায়ে ধাক্কা লাগে জিন্নাহর লোকজনের। এরপর তারা মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার পথিমধ্যে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা আমার বড় ভাই মনির হোসেনকে ও তার কয়েকজন সমর্থককে বেধড়ক মারধর করে। সব দোষ জিন্নাহর সমর্থকদের।’
সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন সরে পড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।’