- আজ রবিবার
- ৭ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
- ২০শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
- ১৯শে শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি
গাজীপুর টিভি ডেস্ক | ১১ ডিসেম্বর ২০২১ | ৪:৪৩ অপরাহ্ণ
ক্ষমতায় টিকে থাকতে গুম-খুন-দুর্নীতিতে সরকারের নীরব ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, একটা কথা মনে রাখা উচিত, অন্ধ হলেই প্রলয় বন্ধ হয়ে যায় না।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশগুলো তো আপনাদের মতো চোখ বন্ধ করেনি। তারা জানে, বাংলাদেশে কী হচ্ছে। তারা জানে, ইলিয়াস আলী-চৌধুরী আলম-সাইফুল ইসলাম হিরু নেই কেন, এটার সঙ্গে কারা জড়িত।
আজ শনিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসা নিশ্চিত এবং জিয়া পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল বক্তব্যের প্রতিবাদে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দিবসটির উদ্দেশ্য হচ্ছে- কারও যেন মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয়। দেশে দেশে প্রত্যেকটি মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণের জন্য জাতিসংঘ এ দিবসটি পালন করে। মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে।
মানবাধিকার প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সরকারের কীসের উদ্বুদ্ধ হওয়া? তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার (শেখ হাসিনা) ক্ষমতার হরিণ চাই- এই যার নীতি তার তো একটাই লক্ষ্য, তার বিরুদ্ধে যেন কোনো আওয়াজ না হয়। তার বিরুদ্ধে কেউ যেন কোনো কথা বলতে না পারে। তার পথে কেউ যেন কাঁটা হয়ে না থাকতে পারে, সেটার জন্য তার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা।
রিজভী বলেন, বিশ্ব নাগরিকরা, সুশীল সমাজ, জাতিসংঘ কে কী বললো এতে তার (প্রধানমন্ত্রীর) কিছু যায়-আসে না। তার মূল লক্ষ্য, তাকে ক্ষমতায় থাকতে হবে। খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় টিকে থাকার পথে বাধা মনে করেন শেখ হাসিনা। তাই শেখ হাসিনার কাছে খালেদা জিয়ার কোনো মানবাধিকার থাকতে নেই, নাগরিক হিসেবে কোনো অধিকার থাকতে নেই, চিকিৎসার অধিকার থাকতে নেই।
তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী আইনি প্রক্রিয়ার কথা বলেন। যার হাতে ক্ষমতার বন্দুক, সেই বলে আইনি প্রক্রিয়ার কথা। যে বিবেকবান, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সে চায় নিরপেক্ষ আইনের চর্চা। যিনি সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তিনি অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না- এটা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই।
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি গণতান্ত্রিক সম্মেলন হয়ে গেলো। সেখানে বাংলাদেশকে ডাকা হলো না। এরপর আমরা দেখলাম, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু তারা নয়, সেখানে লেখাপড়া করার ক্ষেত্রে তাদের সন্তানদেরও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি মন্ত্রণালয়ও (অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনো সম্পত্তি থাকলে তা বাজেয়াপ্ত হবে। এজন্য দায়ী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
রিজভী বলেন, আপনার (শেখ হাসিনার) অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য আজকের পুলিশপ্রধান ২০১৪-১৫ সালে পুলিশদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, তোমাদের হাতে বন্দুক দেওয়া হয়েছে, পকেটে গুলি দেওয়া হয়েছে কি পকেটে রাখার জন্য? অর্থাৎ দেশের বিরোধী দলের নেতাদের বুক গুলি করে ঝাঝরা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন এই ব্যক্তি।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন-আল রশিদ, মহাসচিব ডা. আব্দুস সালাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, কাদের গনি চৌধুরী, আবেদ রাজা, ড্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. আব্দুস সেলিম, সহ-সভাপতি ডা. শহীদ হাসান, ডা. সিরাজ, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসান, যুগ্ম-মহাসচিব ডা. রফিকুল ইসলাম ও ডা. পারভেজ রেজা কাকন।